সুস্থ থাকতে স্বাস্থ্যকর খাবারের বিকল্প নেই। সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য সবচেয়ে জরুরী হলো খাবারের প্রতি মনোযোগী হওয়া। খাবার শক্তি জুগিয়ে শরীরের কাজ ঠিকঠাক মতো করতে সাহায্য করে। শুধু খাবার খেলেই হবেনা , নিয়ম মেনে সঠিক এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। সুস্থ থাকার জন্য আরো খেতে হবে প্রচুর পরিমানে তরলজাতীয় এবং সহজপাচ্য খাবার।
নিজেকে সুস্থ রাখার দায়িত্ব আপনারই। সে জন্য নিজেকে সময় দিতে হবে ,খেতে হবে পর্যাপ্ত পরিমানে পুষ্টিকর খাবার। আপনি যদি নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার না খান তাহলে খুব সহজেই অসুস্থ হয়ে পড়বেন। স্বাস্থ্যকর খাবার না খেলে আপনি অসুস্থ হতে বাধ্য। তাই সুস্থ থাকার জন্য সবার আগে খাবারের প্রতি মনোযোগী হতে হবে। আজকের আলোচনার বিষয় হলো সুস্থ থাকার জন্য যে সকল খাবার খাওয়া প্রয়োজন। আসুন তাহলে জেনে নেই সুস্থ থাকার জন্য কি কি খাবার খেতে হবে।
১. সবুজ শাকসবজি : শাকসবজি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। সবুজ শাকসবজিতে রয়েছে ভিটামিন এ যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। শরীরের অঙ্গ- প্রত্যঙ্গের মধ্যে লিভারের কাজ খুবই গুরুত্বপূর্ন। লিভার খাবারের টক্সিনকে প্রতিরোধ করে খাবার হজম করতে সাহায্য করে। পালংশাকে রয়েছে ভিটামিনে এ এবং আরো দুটি উপকারী উৎসেক উপাদান। লিভারে ফ্যাট জমার সমস্যা দূর করে এই তিন উপকারী উপাদান। সবুজ শাকসবজি নিয়মিত খেলে শরীর সুস্থ এবং সতেজ থাকবে। তাই প্রতিদিনের খাবারে একটু হলেও সবুজ শাকসবজি রাখা উচিত।
২. বীজ : শরীরকে শক্তিশালী করতে বা শরীরের কাজের ক্ষমতা বাড়াতে বীজ জাতীয় খাবার অতুলনীয়। বীজে আছে প্রচুর আয়রন ও ফাইবার। নিয়মিত বীজ জাতীয় খাবার খেলে ডায়াবেটিস ও রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রনে থাকে। বীজ জাতীয় খাবারে প্রচুর পরিমানে ফাইবার থাকে,সে জন্য খাবার হজম হতে কিছুটা সময় নেয়। বীজ জাতীয় খাবার খেলে পেট ভরা থাকে অনেক সময় । ফলে ওজন কমানো অনেকটা সহজ হয়।
৩. ভিটামিন সি জাতীয় ফল : প্রতিদিন ভিটামিন সি জাতীয় ফল খেতে পারেন। ভিটামিন সি যুক্ত খাবার বিভিন্ন ধরনের সংক্রমন রোগ থেকে রক্ষা করে। ভিটামিন সি জাতীয় ফল শরীরের কোষগুলোকে সতেজ এবং সুরক্ষিত রাখে। ভিটামিন সি জাতীয় ফল দাত ও মাড়ির সংক্রমন রোধ করে। তাই আমাদের নিয়মিত ভিটামিন সি জাতীয় ফল খাওয়া দরকার।
৪. ব্রোকলি : শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য ব্রোকলির ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ন। সবুজ রঙের সবজি ব্রোকলিতে রয়েছে নানা ধরনের উপকারী উপাদান। মরন ব্যাধি ক্যান্সারের সাথে লড়াই করতে পারে ব্রোকলিতে থাকা একধরনের এনজাইম। মরনঘাতি ক্যান্সারসহ নানা ধরনের রোগ থেকে বাঁচতে হলে নিয়মিত ব্রোকলি খেতে হবে। এছাড়াও ব্রোকলিতে রয়েছে অনেক খনিজ উপাদান । যা শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
৫. ডিম : ডিমের উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের অনেকেরেই ভালোভাবে জানা নেই। আমরা মনে করি ডিম খেলে রক্তে কোলেস্টরল এর মাত্রা বেড়ে যায়। কিন্তু আমাদের এ ধারনা ভুল। গবেষনায় দেখা গেছে যে , ডিম খেলে কোলেস্টরল বাড়ে না। ডিমে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন। একটি ডিমে এনার্জি রয়েছে ১৪৩ ক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট রয়েছে ০.৭২ গ্রাম, প্রোটিন রয়েছে ১২.৫৬ গ্রাম , পটাশিয়াম রয়েছে ১.২৯ মিলি গ্রাম এবং ফ্যাট রয়েছে ৯.৫১ গ্রাম। ডিমে আরো রয়েছে আয়রন , সেলোনিয়াম, ভিটামিন এ , বি টুয়েলভ এর মতো প্রয়োজনীয় উপাদান। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এসব উপাদান সাহায্য করে। প্রতিদিন একটি করে ডিম খাওয়ার অভ্যাস করলে শরীর সুস্থ থাকবে। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় একটি ডিম রাখা উচিত।
৬. মাশরুম : মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি করাই ভিটামিন ও মিনারেলের প্রধান কাজ। প্রাকৃতিকভাবে মাশরুমেই সবচেয়ে বেশি ভিটামিন ও মিনারেল বিদ্যমান। মাশরুমে আছে প্রচুর পরিমানে ক্যালসিয়াম , আয়রন , পটাসিয়াম ও সেলোনিয়াম। মাশরুমকে বলা হয়ে থাকে সুপারফুড। এছাড়া মাশরুমে কোলিন নামক একটি বিশেষ উপাদান পাওয়া যায় , যা স্মৃতিশক্তি ও পেশির সক্রিয়তা বজায় রাখতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে।
মাশরুমে অ্যান্টি- অক্সিডেন্টে ভরপুর। এর মধ্যে বিশেষ হলো এরগোথিওনিন, যা ওযন কমাতে ও বার্ধক্যের লক্ষন কমাতে সহায়তা করে। প্রতিদিন মাশরুম খেলে মেরুদন্ড দৃঢ় হয় এবং ব্রেইন সুস্থ থাকে। তাছাড়াও মাশরুম ভাইরাস জনিত রোগের প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। হাইপার টেনশন দূর করতে এবং সুস্থ থাকতে হলে মাশরুম খাওয়ার অভ্যাস করুন।