আজকের শিশু আগামীদিনের ভবিষ্যৎ, আর এই কথাটি মূহুর্তেই ফিকে হয়ে যেতে পারে, যদি পরিবারের মধ্যে আলো ছড়ানো শিশুটি অসুস্থ হয়ে পরলে। তার সুস্থতার জন্যে দেখা যায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ডাক্তার বেটে খাওয়ানো হয়ে থাকে। কিন্তু আমরা হয়তো ভূলে যাই যে কেমিক্যাল তেজষ্ক্রিয়া শিশুর ভবিষ্যৎ কে আরো হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে। কারন একটি শিশু ভুমিষ্ট হওয়ারও বহুদিনপরে মূলত তার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার সৃষ্টি হয়। আর এই সময় শিশু অসুস্থ হলে আসলে হারবাল বা প্রাকৃতিক চিকিৎসা দেয়াই সব চেয়ে উত্তম কাজ।
নবজাতক শিশুর শ্বাসকষ্টঃ
নবজাতকের শ্বাসকষ্ট নিম্নোক্ত তিন লক্ষণের যে কোনোটা এক বা একাধিক চিহ্ন নিয়ে প্রকাশ পায়।
* প্রতি মিনিটে শ্বাস এর হার ৬০ বা তার বেশি
* বুকের নিচের অংশ গভীরভাবে ডেবে যাওয়া
* শ্বাসপ্রশ্বাসে কষ্টকর শব্দ।
নবজাতকের ৫-১০ শতাংশ ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। তার কারণাদি নবজাতকের বয়স, গর্ভকাল ও মায়ের স্বাস্থ্য ঝুঁকির ওপর নির্ভরশীল থাকে।
শ্বাসকষ্টের প্রধান কারণঃ
আরডিএস, টিটিএন, গর্ভকালীন নিউমোনিয়া, মিকোনিয়াম এসপিরেশন সিনড্রোম, নিউমোনিয়া, এসপিরেশন নিউমোনিয়া, এগুলো হচ্ছে শ্বাসতন্ত্রের অসুখ।
* হার্ট ফেলিওর।
* কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের অসুখঃ ভূমিষ্ঠকালীন শ্বাসরোধ জটিলতা, মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে রক্তপাত।
* মেটাবলিক, রক্তে গ্লুকোজ মাত্রা নেমে গেলে, রক্তে অম্লতা।
অন্যান্যঃ অত্যধিক শীতলতা, রক্তে বেশি মাত্রার হিমোগ্লোবিন প্রভৃতি।
আরো পড়ুন – গর্ভাবস্থায় করণীয় কিছু স্বাস্থ্য টিপস
শিশুর মলে রক্ত দেখা গেলেঃ
শিশুর নানা আন্ত্রিক রোগে মলে রক্ত দেখা যায়। আন্ত্রিক রক্তপাত নালির উপরের অংশে বা নিচের অংশ যে কোনোটা থেকে হতে পারে। কালো পায়খানা, দেখতে তারপিন এর মতো (মেলেনা) দেখা গেলে তা- পাকস্থলিতে অল্প পরিমাণ (৫০-১০০ মিলি) রক্তপাতের ফলে হতে পারে, যা ৩-৫ দিন স্থায়ী হয়। অন্ত্রনালীর রক্তপাতের জন্য যথাযথ হারবাল চিকিৎসা নেয়া সব থেকে শ্রেষ্ঠ সিদ্ধান্ত, সঙ্গে সঙ্গে ইমার্জেন্সি ব্যবস্থাও গ্রহণ করা উচিত।
* যেসব দ্রব্য বা খাবার লাল রঙের যেমন জেলি, টমেটো বা স্টবেরি, তা শিশুর বমিতে বা মলে রক্তরঙ নিয়ে আসতে পারে।
* শিশুর নাক থেকে রক্তপাত, নবজাতক বয়সে জরায়ুতে থাকাকালীন সময়ে রক্ত গিলে ফেলা। কফ এর বা কাশির সাথে রক্ত, মুখগহ্বরের রক্ত গিলে ফেলার কারণে আন্ত্রিক নালি হতে রক্তপাত হচ্ছে বলে ভ্রম হতে পারে। সেজন্য দ্রুততার সঙ্গে নাক, গলা ও মুখগহ্বর এর হারবাল চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে।
যেসব সচরাচর কারণে শিশু বয়সে আন্ত্রিক রক্তপাত হয় সেসব হলঃ
* মলদ্বারের ফিসারস * ইন্টা-সাসেপশামস-টেলিস্কোপের মতো অন্ত্রনালির এক অংশ নিচের অংশে ঢুকে যাওয়া * অ্যামিবা পরজীবী সংক্রমণ * মিকেলস ডাইভারটিকুলাম * কোলনের পলিপ * আন্ত্রিক প্রদাহ রোগ (আইবিডি) * পায়ুমুখের আলসার।
অসচরাচর কারণাদি হল পাইলস্ (হিমোরইডস), রক্তনালির স্থানিক টিউমার ইত্যাদি।
আরো পড়ুন – কিভাবে নবজাতক শিশুর যত্ন নিতে হবে
শিশুর স্ট্রোকঃ
প্রতি লাখে প্রায় ৩-৮ জন শিশু স্ট্রোকে পতিত হয়। যার মধ্যে নবজাতক শিশুও উল্লেখযোগ্য হারে থাকে। এর আধিক্য দেখা যায় ছেলে সন্তানে।
স্ট্রোক কিঃ সংজ্ঞা অনুযায়ী ব্রেইন এর কার্যক্রম যদি স্থানিক বা সামগ্রিকভাবে ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অকেজো থাকে, যা থেকে কখনও কখনও মৃত্যুও ঘটে তবে তা স্ট্রোক বলে অভিহিত হয়।
কারণ ও ধরনঃ
শিশু বয়সে মূলত দুই ধরনের স্ট্রোক হয়ে থাকে যার পার্থক্য নির্ণয় চিকিৎসার প্রয়োজনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ব্রেইনে রক্ত সঞ্চালন রুদ্ধ হলে ইসকেমিক্ স্ট্রোক (শিশু বয়সে দু-তৃতীয়াংশ স্ট্রোক হয় এসব কারণে, এতে রক্ত সঞ্চালন পথরুদ্ধ থাকার ফলে মস্তিষ্ক কোষ যথাযথভাবে রক্ত সঞ্চালন থেকে বঞ্চিত থাকে)।
হার্টের অসুখঃ
জন্মগত হৃদত্রুটি, বাতজ্বরজনিত হার্টের অসুখ, কার্ডিয়াক সার্জারি পরবর্তী জটিলতা
রক্ত রোগঃ
সিকেল সেল অ্যানিমিয়া, ব্লাড ক্যান্সার, পলিসাইথেমিয়া
নানা সংক্রমণঃ
ব্যাকটেরিয়া, যক্ষ্মা, এইডসজনিত মস্তিষ্কের সংক্রমণ
অন্যান্যঃ
রক্ত চাপ কমে গেলে, আয়রণ ঘাটতিজনিত রক্তস্বল্পতা, এসএলই, মোয়া মোয়া রোগ।
হেমোরেজিকঃ
মস্তিষ্কের কোনো রক্ত নালি ফেটে গিয়ে ব্রেইনের রক্ত নালির জন্মত্রুটি বা টিউমার কিংবা রক্তরোগ – লিউকেমিয়া, ডিআইসি হতে পারে যা মূলত হেমোরেজিক নামেই পরিচিত।
মাথায় আঘাতঃ পড়ে গিয়ে, বা ছোট বাচ্চাকে জোরে টানাটানি- ধাক্কা দেয়া, জন্মকালীন সময়ে মাথায় আঘাত পাওয়ার কারনেও হেমোরেজিক হয়।
অসুখের লক্ষণঃ বয়স, ব্যাপকতা ও ধরনের ওপর নির্ভর করে রোগ লক্ষণাদির পরিবর্তন হয়।
* বেশি বয়সের শিশু বড়দের মতো শরীরের একদিকের প্যারালাইসিস, বাকরুদ্ধ ও ব্রেইনের কোন অংশে আঘাত সে অনুযায়ী চিহ্ন নিয়ে আসে।
* প্রিস্কুল বয়সী শিশুতে আঘাতজনিত দুর্ঘটনা ও মস্তিষ্কে ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ। মেনিজাইটিস যুক্ত থাকে বেশি
* কিছু কিছু উপসর্গ শিশুর সুনির্দিষ্ট কারণের ওপর নির্ভর করে।
শিশুর বদহজম রোগঃ
শিশুর খাবার যদি যথাযথভাবে পাচ্যনালিতে শোষিত না হয়, তবে সে অপুষ্টি সংকটে পড়ে। ৫ বছরের কম বয়সী শিশু প্রধানত এর শিকার।
শিশু বয়সে বদহজমের সচরাচর কারণ
* গরুর দুধের অ্যালার্জি
* কৃমি সংক্রমণ বিশেষত: জিয়ারডিয়া, ক্রিপটো স্পোরিডিয়াম
* সিলিয়াক ডিজিজ- যা গম, বার্লি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য : পেস্ট্রি, হট ডগস প্রভৃতিতে থাকা গ্লুটেন উপাদানে সংঘটিত হয়
* হজমের নানা এনজাইম যা অগ্ন্যাশয়, পিত্তথলি হতে নিঃসৃত হয় তার অভাব।
রোগ লক্ষণাদি
* দীর্ঘমেয়াদি ডায়রিয়া
* উচ্চতায় না বাড়া
* রক্তস্বল্পতা
* রিকেটস্
* শর্করা জাতীয় খাবারে বদহজম- শিশুর মলের পরিমাণ বেশি থাকে, পেট ফাঁপা থাকে ও পায়ুপথে বেশি বাতাস বের হয়
* আমিষ জাতীয় খাবারে হজমে গোলমাল হলে শিশুর মল দুর্গন্ধযুক্ত হয় ও তার শরীরে ফোলা বা পানি জমে
* ফ্যাট বা চর্বি জাতীয় খাবার শোষণে সমস্যা থাকলে সে ‘এ ভিটামিন’সহ নানা ভিটামিনের অভাবে ভোগে
* নানা ভিটামিনস্ (খাদ্যপ্রাণ) ও মিনারেলস্ (খনিজ পদার্থ) এর অভাবজনিত রোগ চিহ্ন যেমন: রক্ত শূন্যতা, রক্তাভ জিভ, মুখের কোনায় ঘা ইত্যাদি দেখা যায়।
কলিকাতার হারবাল চিকিৎসাঃ
দীর্ঘ ২১ বছর ধরে প্রাকৃতিক বা হারবাল চিকিৎসা জগতের একটি নির্ভরযোগ্য নাম কলিকাতা হারবাল যারা শতভাগ খাঁটি চিকিৎসার জন্যে দেশের ও দেশের বাইরের মানুষেরও শতভাগ আস্থা অর্জন করে নিয়েছে অত্যন্ত দ্রুত সময়ের মধ্যে। কলিকাতা হারবালের রয়েছে শিশু বিশেষজ্ঞদল। যারা শিশু বিষয়ক সকল সমস্যার স্থায়ী হারবাল সমাধান দিয়ে থাকেন অত্যন্ত স্বল্প সময়ের মধ্যে। আমাদের শিশু বিশেষজ্ঞগন বহুবছর ধরে এ পর্যন্ত শিশুদের সকল প্রকার সমস্যা নিয়ে গবেষনা করে প্রায় সকল বিষয়ের সহজ ও সম্পূর্ণ আস্থাভাজন সমাধান বের করেছেন শুধুমাত্র মানুষের মাঝে সঠিক সেবা পৌঁছে দেয়ার জন্যে। শিশুরা পরিবারকে সব সময় যেভাবে আলোকিত করে রাখে সেভাবে আমাদেরও উচিত তাদের অসুস্থ থাকা অবস্থায় সর্বদা সহজ ও প্রাকৃতিক চিকিৎসা দিয়ে তাদের সুস্থ করে তোলা, যাতে করে তার সুস্থ ও হাসি মাখা মুখখানি পরিবারের মাঝে আবার প্রানের সঞ্চার করতে পারে। আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ, আর আপনার একটি সঠিক সিদ্ধান্তই পারে তার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করতে।