স্বাস্থ্য বিষয়

লিভার বা যকৃৎ হচ্ছে দেহের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। যা আমাদের শরীরের বিপাকীয় কার্যাবলী সম্পাদন করে। এই অঙ্গ থেকে নিসৃত জারক রসেই খাবার হজম হয়। যাদের লিভার দুর্বল, তাদের পেটে সারাবছর সমস্যা লেগেই থাকে। গবেষকের মতে, লিভারের রোগকে নীরব ঘাতক বলে থাকে। কেননা লিভারের যেকোনো রোগ সাধারণত প্রাথমিক পর্যায়ে বোঝা যায় না। রোগ বেড়ে গেলে এর লক্ষ্মণগুলো প্রকাশ পায়। 

যে যে অভ্যাসের কারনে লিভার সমস্যা হয়ঃ 

মানুষের  শরীরে একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হল লিভার। শরীরে যত ক্ষতিকারক টক্সিন জমে তা শরীর থেকে ছেকে বের করে দেয় এই লিভার। কিন্তু লিভারের কার্যক্ষমতা যদি নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে ক্ষতিকারক টক্সিন শরীরে জমে । যার ফলে একের পর এক বিকল হতে থাকে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। তাই শরীর সুস্থ রাখার জন্য লিভার সুস্থ রাখাটা খুবই প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের কিছু অভ্যাসের কারণের জন্য বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায় লিভারে।

১) সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর দীর্ঘক্ষন না খাওয়া অবস্থায় থাকার অভ্যাস লিভারের পক্ষে ক্ষতিকর। দীর্ঘদিন ধরে এই অভ্যাস চলতে থাকলে বিকল হয়ে পড়বে লিভার। 

২) সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর অনেকেই আলিস্যির কারণে প্রস্রাব চেপে রেখে শুয়ে থাকেন। এই অভ্যাস লিভারের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর।

৩) দেরি করে ঘুমোতে যাওয়া ও দেরি করে ঘুম থেকে ওঠা দুটি অভ্যাসই শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর। এই অভ্যাসের কারণে হজমের নানান সমস্যা দেখতে পাওয়া যায়। যা শরীরে মারাত্মক সমস্যার সৃস্টি করে।

৪) মাত্রাতিরিক্ত পরিমানে খাওয়া-দাওয়া করলেও হতে পারে লিভারের ক্ষতি. প্রিয় খাবার যদি প্রতিদিন পরিমানে বেশি খাওয়া হয়ে, তাহলে লিভারের উপর চাপ পড়ে। যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে লিভার।

৫) মাত্রাতিরিক্ত ওষুধ খেলেও হয়ে লিভারের ক্ষতি। বিশেষ করে যে ওষুধ গুলি ব্যথা কমানোর ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।

লিভার সমস্যার লক্ষণসমূহঃ

বিভিন্ন ভাবে এই লিভার সমস্যার লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে পারে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য লক্ষণগুলো হচ্ছেঃ

দুর্গন্ধযুক্ত নিঃশ্বাসঃ মুখের স্বাস্থ্য ভালো থাকার পরেও যদি আপনার নিঃশ্বাসের সঙ্গে দুর্গন্ধ বের হয় তাহলে বুঝবেন যে আপনার লিভারের কোনো সমস্যা আছে। লিভারের স্বাস্থ্য ভালো না থাকার একটি লক্ষণ এটি।

অকারণে ওজন বেড়ে যাওয়াঃ লিভার যেহেতু চর্বি হজমের জন্য প্রধানত দায়ী সেহেতু এটি যথাযথভাবে কাজ না করলে দেহে চর্বি জমতে থাকে। যার ফলে ব্যাখ্যাতীতভাবে অকারণে ওজন বাড়তে থাকে।

অ্যালার্জিঃ লিভার ভালো থাকলে সে এমন সব অ্যান্টিবডি তৈরি করে যেগুলো অ্যালার্জেন বা অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী যে সকল উপাদানগুলো রয়েছে সে সকল উপাদানগুলোকে আক্রমণ করে ধ্বংস করে দেয়। কিন্তু লিভারের কার্যক্ষমতা কমে গেলে শরীর ওই অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী উপাদানগুলোকে জমা করতে থাকে। এর প্রতিক্রিয়ায় আবার দেহ হিস্টামিন উৎপাদন করতে থাকে যা অ্যালার্জি সৃষ্টিকারক উপাদানগুলো দূর করতে কাজ করে। কিন্তু অতিরিক্ত হিস্টামিন উৎপাদন হলে আবার চুলকানি, ঝিমুনি এবং মাথা ব্যথা হতে পারে।

ক্রমাগত অবসাদঃ দেহে টক্সিন জমা হলে তা মাংসপেশির টিস্যুর বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় বাধার সৃষ্টি করে। যা থেকে আবার ব্যাথা এবং শারীরিক অবসাদও সৃষ্টি হতে পারে। ক্লান্তি থেকে মেজাজ খিটখিটে হওয়া কিংবা মানসিক অবসাদ এবং ক্ষোভের বিস্ফোরণের মতো বিশাল সমস্যাও তৈরি হতে পারে। লিভার ভালো না থাকার আসল লক্ষণগুলোর মধ্যে এটি একটি অন্যতম লক্ষন। দেহে অতি উচ্চ মাত্রায় টক্সিন বা বিষ জমা হওয়ারও একটি লক্ষণ এটি।

অতিরিক্ত ঘাম বের হওয়াঃ বেশি বেশি কাজ করার জন্যে লিভারের কার্যক্ষমতা কমে যায় এবং এর ফলে লিভার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তখন লিভার দেহের অন্যান্য অঙ্গেও তাপ ছড়িয়ে দেয় এবং অতিরিক্ত ঘাম বের করে। আর এই ঘাম বের করার মধ্য দিয়ে সে নিজেকে ঠাণ্ডা করে।

ব্রণঃ লিভারে জমা হওয়া টক্সিন দেহের মধ্যে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। যা থেকে ত্বকে ব্রণ সৃষ্টি হয়। কার্যক্ষমতা হারানো লিভারের কারণে সৃষ্ট ত্বকের এই সমস্যা ততক্ষণ পর্যন্ত যাবে না যতক্ষণ না পুনরায় লিভারের কার্যক্ষমতার উন্নতি ঘটানো হবে।

চোখে হলদে ভাবঃ হলদে চোখ হল একটি উপসর্গ যাতে বুঝা যায় যে লিভার ভালোমতো কাজ করছে না এবং এটি সম্ভবত লিভার ডিজিজ বা যকৃত রোগের সবচেয়ে নির্দিষ্ট উপসর্গ। বিলিরুবিন নামক হলুদ রঙয়ের একটি পদার্থ সাধারণত লিভার দ্বারা বিকল হয়ে শরীর থেকে অপসারিত হয়ে যায়। কিন্তু লিভারে সমস্যা হলে শরীরে বিলিরুবিন পুঞ্জিভূত হতে থাকে যা চোখের সাদা অংশকে হলদে করে তোলে।

আপনার পেট তরলে ভরে যায়ঃ আপনার পেট যদি হঠাৎ ফুলে যায় এবং তা যদি না থামে, তাহলে এটি সাধারণ ব্লোটিং বা পেট ফোলার চেয়েও বেশি ফুলে যেতে পারে। বলেন, লিভারের আশেপাশের রক্তনালীসমূহের মধ্যে বর্ধিত চাপ পেটের ভেতর তরল জমা করতে পারে। গ্যাস, খাবার কিংবা তরলের কারণে আপনার পেট ফুলে গেছে কিনা জানতে হারবাল চিকিৎসক দেখানো গুরুত্বপূর্ণ।

আপনার হেপাটাইটিস এ, বি অথবা সি আছেঃ ভাইরাস অথবা প্যারাসাইট বা পরজীবী বা জীবাণু দ্বারা লিভার সংক্রমিত হলে লিভারে প্রদাহ হয় এবং লিভারের কার্যক্ষমতা কমে যায়। লিভার ইনফেকশন বা যকৃত সংক্রমণের সবচেয়ে বেশি প্রচলিত ধরন হল, হেপাটাইটিস ভাইরাস। আক্রান্ত ব্যক্তির মলের সংস্পর্শে আসলে অথবা দূষিত খাবার ও পানি শরীরে গ্রহণ করলে হেপাটাইটিস এ ছড়ায়। অন্যদিকে হেপাটাইটিস বি এবং সি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রক্ত, যৌন মেলামেশা এবং অন্যান্য শারীরিক তরলের মাধ্যমে দেহে প্রেরিত হতে পারে। হেপাটাইটিস সি এর জন্য ভালো হারবাল চিকিৎসা আবিষ্কার হয়েছে, তাই লোকজনের হেপাটাইটিস সি আছে কিনা পরীক্ষা করা উচিত। লিভার সুস্থ রাখার বিষয় সম্পর্কে জানতে হারবাল চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন।

আপনি চুলকানি থামাতে পারেন নাঃ আপনি বিশ্বাস করুন কিংবা না করুন, একটি অসুস্থ লিভার শরীরের সর্বত্র চুলকানির উদ্রেক করতে পারে। আমরা নিশ্চিতভাবে জানি না, কিন্তু এটি বাইল সল্ট বা পিত্ত লবণের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে মনে করা হয়। পিত্ত হচ্ছে লিভার দ্বারা উৎপাদিত পাচন পদার্থ, কিন্তু প্রাইমারি বিলিয়ারি সিরোসিস (একটি অটোইমিউন যকৃত রোগ যা বাইল ডাক্ট বা পিত্তনালীকে বন্ধ করে দেয়) রোগে আক্রান্তদের মধ্যে পিত্ত জমা হতে থাকে এবং শরীরে উল্লেখযোগ্য উপসর্গ (যেমন- চুলকানি) দেখা দেয়।

অতিমাত্রায় মদ্যপ থাকেনঃ অতিরিক্ত ও দীর্ঘমেয়াদে অ্যালকোহল সেবনে লিভারের অনেক ক্ষতি হতে পারে, এমনকি শেষপর্যন্ত যকৃত রোগও হতে পারে। লিভার শরীরের কেমিক্যাল ও টক্সিন দূরীকরণে সাহায্য করে, তাই প্রতিনিয়ত মদ্যপানে এটিকে পাম্পিং করার মানে হল এটিকে ওভারটাইম কর্মে ব্যস্ত রাখা হচ্ছে।

বুদ্ধিভ্রষ্ট বা বিস্মরণপ্রবণঃ সামান্য বিস্মরণ বা ভুলে যাওয়া ভালো বিষয় বলে বিবেচিত, কিন্তু হঠাৎ করে সবকিছু ভুলে যাওয়া কিংবা সহজেই বুদ্ধিভ্রষ্টতাকে অনউপকারী ব্রেইন ফার্ট (সাময়িক বিস্মরণ) ভাববেন না। হেপাটিক এঞ্চেফ্যালোপ্যাথি (রক্ত থেকে টক্সিন অপসারণে লিভারের ব্যর্থতার ফলে মস্তিষ্কের কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া) হচ্ছে, এমন এক অবস্থা যা লিভার শরীর থেকে টক্সিন দূর করতে অসমর্থ হলে হয়ে থাকে এবং তা সাধারণত সেসব রোগীদের হয়ে থাকে যাদের দীর্ঘস্থায়ী যকৃত রোগ, সিরোসিস অথবা হেপাটাইটিস আছে।

এ ছাড়াও বারবার বমি হওয়া, ফেকাসে পায়খানা হওয়া, খাওয়ার পর মুখে তেতো তেতো ভাব, পিত্তে সমস্যা, চর্বিজাতীয় খাবার খাওয়ার পর পেট ব্যথা হওয়া, চোখের ওপরে ব্যথা করা, টানা অবসন্নতা, অর্শ্বরোগ এবং স্থায়ীভাবে বর্ধিত শিরা এগুলোও লিভার সমস্যার লক্ষণগুলোর মধ্যে অন্যতম কিছু লক্ষণ।

আরো পড়ুন – হাঁপানি বা অ্যাজমা থেকে মুক্তির উপায়

আরো পড়ুন – নাক, কান, গলা রোগের স্থায়ী চিকিৎসা ও পরামর্শ

লিভারের চিকিৎসাঃ

লিভারের সমস্যা ঠিক করতে প্রাকৃতিক ভাবে ভেষজ উপায়ে দীর্ঘ ২১ বছর ধরে অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে কাজ করে আসছে কলিকাতা হারবাল। আমাদের কাছে রয়েছে লিভার সম্পর্কিত নিজস্ব দক্ষ বিশেষজ্ঞগন। যারা আপনাকে দেবে লিভার সংক্রান্ত সকল সমস্যার নির্ভূল ও আসল সমাধান। অনেকেই আসলে হারবাল উপায়ে লিভারের চিকিৎসা করালে সেটা সঠিক হবে কিনা তা নিয়ে অনেক দ্বিধা দন্দে ভোগেন। তাদের উদ্দেশ্যে আমরা বলতে চাই যে বিশ্বে বহু শতাব্দী ধরে সকল সমস্যার জন্যে মানুষ হারবাল উপাইয়েই চিকিৎসা নিয়ে আসছেন। আস্থার জায়গা কিংবা সুফলের জায়গা না থাকলে এতো যুগ যুগ ধরে হারবাল সেবা পৃথিবী তে কখনই এভাবে মাথা উচু করে টিকে থাকতো না। লিভার সমস্যায় সেরা সমাধান নিয়ে কলিকাতা হারবাল সব সময় আপনাদের সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান। 

Leave a comment