হারবাল তথ্য

অনেকসময় সচেতনতার অভাবে কোনো রোগ অনেক কঠিনের দিকে চলে যেতে পারে। তাই লক্ষণ দেখে আগেই রোগের উপস্থিতি জানা গেলে দ্রুত আরোগ্য লাভ করা সম্ভব হয়। আসুন জেনে নেয়া যাক কিডনির সমস্যা কিভাবে বুঝবেন।

কিডনির পরিচিতিঃ

কিডনি আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। কিডনির তুলনা সুপার কম্পিউটারের সঙ্গে করা উচিত কারণ কিডনির গঠন এবং কাজ অতীব জটিল ।

কিডনি শরীরের রক্ত পরিষ্কার করে মূত্র তৈরি করে। শরীর থেকে মূত্র নিষ্কাশন করার কাজ মূত্রনালিকা (Urethra) দ্বারা হয়ে থাকে।

স্ত্রী ও পুরুষ দুজনের শরীরেই সাধারণত দুটি কিডনি থাকে। কিডনি পেটের ভিতরে, পিঠের দিকে, মেরুদন্ডের দুই পাশে কোমরের অংশে অবস্থিত।

কিডনির আকার সিম বীজের মতো হয়। প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির কিডনি সাধারণত ১০ সেন্টিমিটার লম্বা, ৫ সেন্টিমিটার চওড়া আর ৪ সেন্টিমিটার মোটা হয়। প্রতিটি কিডনির ওজন ১৫০-১৭০ গ্রামের মধ্যে হয়।

কিডনির দ্বারা প্রস্তুত মূত্র মূত্রাশয় পর্যন্ত মূত্রবাহিনী নালী দ্বারা পৌছায় মূত্রবাহী নালী সাধারণত ২৫ সেন্টিমিটার লম্বা হয় আর বিশেষ প্রকারের রাবার জাতীয় (Eastic) মাংসপেশী দ্বারা তৈরি হয়।

মুত্রাশয় পেটের নীচের অংশে সামনের দিকে (তলপেট) অবস্থিত একটি স্নায়বিক থলি, যার মধ্যে মূত্র জমা হয়।

যখন মূত্রাশয়ে ৩০০-৪০০ মিলিলিটার (ml) মূত্র জমা হয় তখন মূত্ৰত্যাগের বেগ আসে। মূত্রনালিকা দ্বারা মূত্র শরীর থেকে বাইরে আসে।

প্রত্যেক ব্যক্তির খাবারের ধরন ও মাত্রা প্রতিদিন পরিবর্তিত হয়।খাবারের মধ্যে বৈচিত্র্যের কারণে শরীরে পানি, অম্ল ও ক্ষারের মাত্রা নিরন্তর পরিবর্তিত হয়। খাবারের পাচন প্রক্রিয়ার সময় অনেক অনাবশ্যক পদার্থ শরীরে উৎপন্ন হয়।শরীরে পানি, অম্ল বা ক্ষারের সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থের মাত্রার ভারসাম্য নষ্ট না হলে তা মানুষের পক্ষে হানিকারক বা মৃত্যুর কারণ ও হতে পারে। কিডনি শরীর থেকে অনাবশ্যক দ্রব্য বা পদার্থ মূত্র হিসাবে শরীর থেকে বের করে রক্তের পরিশোধন করে এবং শরীরে ক্ষার এবং অম্লের ভারসাম্য বজায় রাখে। এইভাবে কিডনি শরীরকে স্বচ্ছ এবং সুস্থ রাখে।

আরো পড়ুন – কি কি ভুলের কারনে লিভার সমস্যা দেখা দেয়?

কিডনির কাজঃ

আমরা ইতিমধ্যেই হয়তো জেনেছি যে কিডনি আমাদের শরীরের জন্যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এবার কিডনির কাজগুলো সম্পর্কে কিছুটা জানার চেষ্টা করবো। কিডনির প্রধান কাজগুলি হল :

রক্তের পরিশোধনঃ

কিডনি নিরলসভাবে সর্বক্ষণ উৎপন্ন অনাবশ্যক পদার্থগুলিকে মূত্রদ্বারা শরীর থেকে দূর করে।

শরীরে পানির ভারসাম্য বজায় রাখাঃ

কিডনি শরীরের প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি মূত্রদ্বারা শরীর থেকে বাইরে বের করে দেয়।

অম্ল এবং ক্ষারের ভারসাম্য বজায় রাখাঃ

কিডনি শরীরে সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্লোরাইড,ম্যাগনেশিয়াম,ফসফেটস,বাই কার্বনেট ইত্যাদির মাত্রা যথাযথ রাখার কাজ করে। সোডিয়ামের মাত্রা বাড়া বা কমার সঙ্গে মাথার উপর,আর পটাশিয়ামের মাত্রা বাড়া-কমার সঙ্গে হৃদয় বা স্নায়ুতন্ত্রের গতিবিধির গভীর প্রভাব পড়তে পারে।

রক্তচাপের নিয়ন্ত্রণঃ

কিডনি অনেক হরমোন নিঃসরণ করে যেমন অ্যানজিওটেনসিন,অ্যালডোস্টেরন,প্রোস্টাগ্ল্যানডিন।

এই হরমোনগুলির সাহায্যে শরীরে পানির মাত্রা, অম্ল এবং ক্ষারের ভারসাম্য বজায় থাকে। এই ভারসাম্যের দ্বারা কিডনি শরীরে রক্তচাপ বজায় রাখার কাজ করে।

রক্তকণিকা উৎপাদনে সাহায্যঃ

এরিথ্রোপোয়েটিন কিডনি দ্বারা প্রস্তুত হয়। কিডনি বিকল(Fail)হলে এই হরমোনের নিঃসরণ কমে যায় বা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়, যারা ফলে রক্ত ফ্যাকাসে হয়ে যায়,  যাকে অ্যানিমিয়া (রক্ত কমে যাওয়ার রোগ) বলে।

হাড়ের স্বাস্থ্যঃ

কিডনি সক্রিয় ভিটামিন-ডি, তৈরি করতে সাহায্য করে থাকে। এই ভিটামিন-ডি , শরীরে ক্যালসিয়াম আর ফসফরাসের জরুরি মাত্রা বজায় রেখে হাড় এবং দাঁতের বিকাশ ও মজবুত করার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে।

কিডনিতে রক্তের পরিশোধনের পরে মূত্র কীভাবে সৃষ্টিঃ

সারাদিনে কত মুত্র তৈরি হবে তা নির্ভর করে কত পরিমাণ পানি পান করা হয় তার উপর। কিডনি যদি অসুস্থ হয় এবং GFR (Glomerular Filtration Rate) তখন মূত্র তৈরি করার ক্ষমতাও কমে।

কিডনি প্রয়োজনীয় বস্তুসমূহকে রেখে অপ্রয়োজনীয় পদার্থগুলিকে মূত্রদ্বার দিয়ে শরীরের বাইরে বের করে। এটি একটি অনন্য, অদ্ভূত তথা জটিল প্রক্রিয়া।

কিডনি রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে কিছু কিডনি রোগ আছে, সময়মতো উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে কিডনি ফেইলুর হয়ে যায়। অর্থাৎ কিডনি তার স্বাভাবিক কাজ করতে পারে না। কিডনি ফেইলুরের অন্যতম কারণ হলো অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস রোগ।

সময়মতো চিকিৎসা করা না হলে কিডনি রোগের শেষ পরিণতি অত্যন্ত ভয়ানকও হতে পারে। পাঁচটি ধাপে কিডনি বিকলের দিকে অগ্রসর হয়। প্রথম চারটি ধাপ পর্যন্ত চিকিৎসার মাধ্যমে নিরাময় অথবা যে গতিতে কিডনি ক্ষয় হচ্ছে তা অনেকটা কমিয়ে আনা সম্ভব। কিন্তু একবার পাঁচ নম্বর ধাপে চলে গেলে তখন বেঁচে থাকার উপায় হলো ডায়ালাইসিস অথবা কিডনি সংযোজন। এসব পদ্ধতি খুবই ব্যয়বহুল এবং ঝুকিপূর্ন। টাকার অভাবে দেখা যায় অনেক রোগীর চিকিৎসা মাঝপথে আটকে যায়। কিন্তু অনেকেই হয়তো জানেন না যে সকল ধরনের ওষুধ এর মূল উপাদান আসে আসলে প্রাকৃতিকভাবে ভেষজ উপায়ে। আর সরাসরি হারবাল উপায়ে কিডনী রোগের চিকিৎসা যেমন সহজ তেমনি সাশ্রয়ী।

কিডনী রোগের লক্ষণসমূহঃ

প্রস্রাবে পরিবর্তনঃ কিডনি রোগের একটি বড় লক্ষণ হলো প্রস্রাবে পরিবর্তন হওয়া। কিডনির সমস্যা হলে প্রস্রাব বেশি হয় বা কম হয়। প্রস্রাবের বেগ পেলে প্রস্রাব ধরে রাখা একজন সুস্থ মানুষের অনুপাতে অত্যন্ত মুশকিল হয়ে পরে। বিশেষত রাতে এ সমস্যা বাড়ে। প্রস্রাবের রঙ গাঢ় হয়। অনেক সময় প্রস্রাবের বেগ অনুভব হলেও প্রস্রাব হয় না।

প্রস্রাবের সময় ব্যাথাঃ প্রস্রাবের সময় ব্যাথা হওয়া কিডনির সমস্যার আরেকটি লক্ষণ। মূলত প্রস্রাবের সময় ব্যাথা, জ্বালাপোড়া এগুলো ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশনের লক্ষণ। যখন এটি কিডনিতে ছড়িয়ে পড়ে তখন জ্বর হয় এবং পিঠের পেছনে ব্যাথা করে।

প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়াঃ প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত গেলে এটি খুবই ঝুঁকির বিষয়। এমন হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি লক্ষণ।

ত্বকে দাগ হওয়াঃ কিডনি অকার্যকর হয়ে পড়লে রক্তে বর্জ্য পদার্থ বাড়তে থাকে। এটি ত্বকে চুলকানি এবং দাগ তৈরি করতে পারে।

বমি বা বমি বমি ভাবঃ রক্তে বর্জ্য পদার্থ বেড়ে যাওয়ায় কিডনি রোগে বমি বমি ভাব এবং বমি হওয়ার সমস্যা হতে পারে।

ছোট ছোট শ্বাসঃ কিডনি রোগে ফুসফুসে তরল পদার্থ জমা হয়। এ ছাড়া কিডনি রোগে শরীরে রক্তশূন্যতাও দেখা দেয়। এসব কারণে শ্বাসের সমস্যা হয়, তাই অনেকে ছোট ছোট করে শ্বাস নেন।

পেছনে ব্যাথাঃ কিছু কিছু কিডনি রোগে শরীরে ব্যাথা হয়। পিঠের পাশে নিচের দিকে ব্যাথা হয়। এটিও কিডনি রোগের একটি অন্যতম লক্ষণ।

শরীর ফোলা ভাবঃ কিডনি শরীর থেকে বর্জ্য এবং বাড়তি পানি বের করে দেয়। কিডনিতে রোগ হলে এই বাড়তি পানি বের হতে সমস্যা হয়। বাড়তি পানি শরীরে ফোলা ভাব তৈরি করে।

মনোযোগ দিতে অসুবিধা হওয়াঃ লোহিত রক্তকণিকা কমে যাওয়ার কারণে মস্তিষ্কে অক্সিজেন সঞ্চার কমে যায়। এতে কাজে মনোযোগ দিতে অসুবিধা হয়।

সবসময় শীত বোধ হওয়াঃ কিডনি রোগ হলে গরম আবহাওয়ার মধ্যেও শীত শীত অনুভব হয়। আর কিডনিতে সংক্রমণ হলে জ্বরও আসতে পারে।

রোগ নির্ণয়ের উপায়ঃ মাত্র দুটি পরীক্ষায় জানা যায় কিডনি রোগ আছে কি-না এবং একটি সহজ সমীকরণে বের করা যায় কিডনি শত ভাগের কত ভাগ কাজ করছে। একটি হলো- প্রস্রাবে অ্যালবুমিন বা মাইক্রো অ্যালবুমিন যায় কি-না এবং অন্যটি রক্তের ক্রিয়েটিনিন। 

আরো পড়ুন – হাঁপানি বা অ্যাজমা থেকে মুক্তির উপায়

কিডনি রোগের চিকিৎসাঃ

আমরা সবাই জানি যে এখন বর্তমানে বাংলাদেশ এ হারবাল উপায়ে চিকিৎসার দিক থেকে কলিকাতা হারবাল শীর্ষে অবস্থান করছে। আমাদের কাছে রয়েছে অত্যন্ত অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞ এবং কলিকাতা হারবাল স্বল্প খরচে সেবা দিয়ে আসছে দীর্ঘদিন থেকে।

Leave a comment