স্বাস্থ্য বিষয়

আদা আমাদের সবার সুপরিচিত একটি খাদ্যবস্তু। আমরা আদা প্রতিদিনেই কিছু না কিছুর সাথে খেয়ে থাকি। অনেকে চায়ের সঙ্গে আবার অনেকে এমনি চিবিয়ে খেয়ে থাকে। তবে আদা সবথেকে বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে তরকারিতে মানে রান্নার কাজে। আজকে আমরা জানবো আদার উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে। তবে সর্ব প্রথম জেনে নেই আদার সকল পুষ্টিগুন।

আদার পুষ্টিগুণ

প্রতি ১০০ গ্রাম আদায় মিলবে ৭৯ ক্যালরি, ১৭.৮৬ কার্বোহাইড্রেট, ৩.৬ গ্রাম ভোজ্য আঁশ, ৩.৫৭ গ্রাম প্রোটিন, ৩৩ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম, ১.১৫ গ্রাম লৌহ, ১৪ মিলিগ্রাম সোডিয়াম, ৭.৭ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি।

এছাড়াও আছে ভিটামিন বি সিক্স, ম্যাগনেসিয়াম, দস্তা, ফসফরাস, রাইবোফ্লাবিন, নিয়াসিন এবং ফোলেট।

এখন তাহলে জেনে নেই আদার উপকারিতা ও অপকারিতা কি কি?

আদার উপকারিতা কি কি?

আদার উপকারিতা নিয়ে যাই বলি না কেন তাই কম হয়ে যাবে। একটু খানি আদা আমাদের কতযে উপকার করছে আমরা হয়তো জানিই না। আজকে এক এক করে সব জেনে নিন।

মাইগ্রেন, সাইনাস, গলা ও মাথাব্যথায়

মাইগ্রেন, সাইনাস, গলা বা মাথা ব্যথা হলে দ্রুত কিছুটা লবণ দিয়ে আদা চিবিয়ে খেলে ব্যথা কমে যাবে। এছাড়া প্রতিদিন ২ বেলা ১ চামচ করে আদার রস, লেবুর রস ও মধু গরম পানিতে চায়ের মত করে খেলে মাইগ্রেন বা মাথা ব্যথা দূর হয়

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে আদা বিশেষ একটি ভূমিকা রাখে। যাদের উচ্চ রক্তচাপ তারা আদা চায়ের মত করে খেতে পারেন।

পেটের  সমস্যা ও গ্যাস্ট্রিক দূর করতে

পেটের সমস্যা দূর করার উপকারী একটি উপাদান হলো আদা। এছাড়াও যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আছে তারাও আদা খেতে পারেন। আদা খাওয়ার তেমন কোন নিয়ম নেই। চায়ের সঙ্গে বা কাঁচা যেভাবে ইচ্ছে সেভাবেই খেতে পারেন এতে উপকার পাবেন।

কাশি ও গলা ব্যথায়

হঠাৎ কাশি কিংবা গলা ব্যথা যাই হোক না কেন সাথে সাথে আদা খেয়ে নিতে পারেন। দেখবেন দ্রুত সমস্যার সমাধান মিলেছে। আদা ঠান্ডা কাশি গলায় খুসখুস করার ঘরোয়া একটি মেডিসিন। এছাড়া যদি আপনার গলা ব্যথা থাকে তাহলেও খেতে পারেন উপকার পাবেন।

ডায়াবেটিস রোগীদের উপকারে

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি খুবই উপকারী একটি খাদ্য। আদা দেহের শর্করা বা চিনির পরিমাণ হ্রাস করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এছাড়াও শরীরে ইনসুলিন তৈরী করতে সাহায্য করে।

মলমূত্রজনিত সমস্যায়

মলমূত্র বা পায়খানা সমস্যায় যারা ভুগেন তারা আদা খেতে পারেন। আদার থাকা উপাদান ভিটামিন -বি৬ পায়খানা জনিত সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

মাসিকের ব্যথা কমাতে

মেয়েদের মাসিকের সমস্যা অসহ্য ব্যথা হয়ে থাকে। তখন আদা দিয়ে চা খেতে পারেন এতে মাসিকের ব্যথা কমে যাবে। আপনি মাসিকের ব্যথা কমানোর জন্য আদাকে ব্যবহার করতে পারেন।

ক্যান্সার প্রতিরোধে

গবেষনায় দেখা যাচ্ছে আদা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। আদায় থাকা উপাদান ক্যান্সার তৈরী করা কোষ ধ্বংস করতে সাহায্য করে যার ফলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে।

জ্বর জ্বর, বমি বমি ভাব

শরীরে জ্বর জ্বর বা বমি বমি ভাব হলে ৬  থেকে ৭ বার আদার রস চায়ের মধ্যে মিশিয়ে খান দেখবেন আপনি সুস্থ বোধ করছেন।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ও ক্ষয় দূর করতে

আদা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং কোথায় ক্ষত থাকলে তা সারাতে সাহায্য করে। তার নিয়মিত আদা থেকে পারেন।

এছাড়াও আদার অনেক উপকারিতা আছে। এখানে আদার সবচেয়ে বিশেষ কয়েকটি উপকারিতা তুলে ধরা হলো।

আরো পড়ুন – ডিমের উপকারিতা ও অপকারিতা

আরো পড়ুন – দুধের উপকারিতা ও অপকারিতা 

আরো পড়ুন – সেক্সে কিসমিসের উপকারিতা

আদার খাওয়ার নিয়ম

আদা খাওয়ার বিশেষ কোন নিয়ম নেই। সাধারনত আমরা আদা রান্নার সময় বেশি খেয়ে থাকি। তবে আদা কাঁচা খেতে বেশি উপকার পাবে। যেমন আপনি চায়ের সঙ্গে আদা মিশিয়ে খেতে পারেন অথবা কাঁচাই চিবিয়ে খেতে পারেন। আদা কাঁচা খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়।

আরো পড়ুন – টমেটোর উপকারিতা ও অপকারিতা

আদার অপকারিতা জেনে নেই

আদার উপকারিতা ও অপকারিতা দুটোই আছে। এতক্ষন জানলাম আদার উপকারিতা কি কি? এখন জানবো আদার অপকারিতা কি কি? আদারও কিছু অপকারিতা আছে তাই খাবার পূর্বে আমরা জেনে নেই।

  • গর্ভবস্থায় আদা খাওয়া উচিত না এতে প্রিম্যাচিউর বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
  • আদা চা বেশি খাওয়া উচিত না এতে অনিদ্রা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • আদা বেশি খেলে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ বেশি কমে যেতে পারে যা ক্ষতিকর। এছাড়াও যারা ডায়াবেটিস ও রক্তচাপের ঔষধ খেয়ে থাকেন তাদের আদা না খাওয়াই ভালো।
  • আদা বেশি পরিমানে খেলে ডায়রিয়া ও পেট ব্যথা বাড়তে পারে।
  • আদা বেশি খেলে হৃদযন্ত্রের গতি বেড়ে যায়।
  • অতিরিক্ত আদা খেলে ত্বকের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

পরিশেষে বলা যায়, আদার উপকারিতা যেমন আছে তেমনি অপরিকারিতাও আছে তবে নিয়ম মেনে আদা খেলে আদা আমাদের উপকারী করে। আদার অপকারিতার পরিমান সামান্য।

আরো পড়ুন – এলার্জি দূর করার উপায়

আরো পড়ুন – সেক্সে রসুনের উপকারিতা 

Leave a comment