স্বাস্থ্য বিষয়

হাঁপানি বা অ্যাজমা  কি?

হাঁপানি বা অ্যাজমা হলো একটি ফুসফুসজনিত রোগ। এর ফলে শ্বাসকষ্ট হয়।

শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি কেন হয়?

এটা সাধারণত এলার্জি, বায়ু দূষণ, শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ, আবেগ, আবহাওয়া, খাদ্য ও নির্দিষ্ট ওষুধের কারণেও হতে পারে।
 

হাঁপানি অনেক সময় তীব্র ও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। ফুসফুসে বায়ু প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হলেই হাঁপানির আক্রমণ ঘটতে পারে। অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্ট এমন একটা রোগ যার নির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই। এখন প্রকৃতিতে যেহেতু ধুলাবালির পরিমাণ বেশি তাই হাঁপানি রোগীদের একটু সাবধানে থাকতে হবে। কারণ হাঁপানি রোগীদের জন্য ধুলোবালি অত্যন্ত ক্ষতিকর। অ্যাজমা বা হাঁপানির অনেক চিকিৎসা রয়েছে। তবে এখন আপনি চাইলে খুব সহজে ওষুধ ছাড়াই প্রাকৃতিক উপায়ে পরিত্রাণ পেতে পারেন হাঁপানির হাত থেকে।

তাহলে জেনে নিন হাঁপানি প্রতিরোধের প্রাকৃতিক উপায় সম্পর্কে। শ্বাসকষ্টের বিভিন্ন কারণ হতে পারে তবে সারা বিশ্বের প্রায় 10 কোটি লোক শ্বাসনালীর সচরাচর সমস্যা হাপানি বা এজমা আক্রান্ত সর্দি-কাশি নিউমোনিয়া ব্রঙ্কাইটিস যেমন শ্বাসকষ্ট হয় তেমনি হৃদরোগের কারণ ও শ্বাসকষ্ট হতে পারে পেটের সমস্যা গ্যাস হজমের সমস্যা এলার্জি হাঁপানি রক্তাল্পতা কিডনির সমস্যা এমনকি অতিরিক্ত  মানসিক চাপ বা টেনশনেও শ্বাসকষ্ট হতে পারে। তবে বেশিরভাগ শ্বাসকষ্টের জন্য দায়ী ফুসফুসের সমস্যা। মূলত অবস্ট্রাক্টিভ ডিজিজ এর কারণে শ্বাসকষ্ট হয়। এই ধরনের দুটি বড় রোগ রয়েছে একটি হলো হাঁপানি বা অ্যাজমার অন্যটি হলো ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি) হাঁপানি বা অ্যাজমা মূলত জেনেটিক এবং পরিবেশগত হাঁপানি হলে ফুসফুসে হাওয়া ঢোকা বা বের হওয়ার পাইপ সরু হয়ে যায় বলে শ্বাসকষ্ট হয়।  আর সিওপিডি মূলত বয়স্কদের ক্ষেত্রে হয়। বায়ু দূষণের সংস্পর্শে সিওপিডি রোগ হয়।

আরো পড়ুন – মধু খাওয়ার উপকারিতা

হাঁপানি বা অ্যাজমার লক্ষণঃ শ্বাসকষ্ট, বুকে সাঁই সাঁই আওয়াজ, বুকে চাপবোধ হওয়া, কাশি উঠতে থাকে। কোনো কোনো সময় কাশি একমাত্র লক্ষণ হতে পারে। প্রায় সময়ই রাত্রে, ব্যায়াম বা কায়িক পরিশ্রমের সময় হয়। তবে যেকোন সময়ই এজমা এটাক হতে পারে। আমাদের ফুসফুসে অক্সিজেন বহনকারী সরু সরু অজস্র নালী পথ রয়েছে। ধুলো, অ্যালার্জি বা অন্যান্য নানা কারণে শ্বাসনালীর পেশি ফুলে ওঠে এবং অক্সিজেন বহনকারী নালী পথ সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে। ফলে আমাদের শরীর প্রয়োজনীয় অক্সিজেন পায় না। আর এর থেকেই নিঃশ্বাসের কষ্ট-সহ নানা শারীরিক সমস্যা শুরু হয়।

হাঁপানি বা অ্যাজমার কারণসমূহঃ

1.    অ্যালার্জি এই অসুখের এক অন্যতম কারণ। ধুলো, ধোঁয়া, তুলোর আঁশ, পশুপাখির লোম, রান্নাঘর ও বিছানার ধুলো, বাতাসে ভেসে থাকা ফুলের রেণু ইত্যাদি শ্বাসনালীর সমস্যা সৃষ্টি করে। এগুলি ‘অ্যাজমা অ্যাটাক’-এর ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। এ ছাড়াও রাসায়ানিকের উগ্র গন্ধ, গ্যাস হাঁপানির সমস্যা বাড়িয়ে দেয়।
2.    কিছু কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে অ্যাজমার অ্যাটাক হতে পারে।
3.    ধুমপান এই রোগের ঝুকি অনেকটা বাড়িয়ে দেয়। ধুমপান প্রত্যক্ষ হোক বা পরোক্ষ সেটা হাঁপানির সমস্যা বাড়াবেই। সন্তানসম্ভবা বা গর্ভবতী কোন মহিলা ধুমপান করলে তার গর্ভজাত শিশুর হাঁপানিতে আক্রান্ত হওয়ার প্রচন্ড আশঙ্কা থাকে।
4.    ঋতুপরিবর্তনের সময় জ্বর, সর্দি-কাশি হাঁপানির প্রবণতা অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়।
5.    পরিবারে কারও হাঁপানির সমস্যা থাকলে এই অসুখের ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়।
6.    অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও অবসাদ হাঁপানির সমস্যা অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়।
7.    অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড ও জাঙ্ক ফুড খাওয়া, কনকনে ঠান্ডা জল বা ঠান্ডা পানীয় খাবার অভ্যাস হাঁপানির সমস্যা অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়।

হাঁপানি অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্টের থেকে প্রতিরোধের উপায় :-

1. কফি:- কফি হাঁপানি নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। নিয়মিত গরম কফি পান করলে শ্বাসনালী পরিষ্কার হয়। কিন্তু দিনে তিন কাপের বেশি ব্ল্যাক কফি খাওয়া উচিত না। কফির যদিও অনেক উপকার আছে তবে এটি অতিরিক্ত মাত্রায় সেবনে ক্ষতিও আছে।

2. সরিষার তেল:-যখনই দেখবেন অ্যাজমা বা হাঁপানির আক্রমণ বেড়ে যাচ্ছে তখনি একটি বাটি মধ্যে একটু কর্পূর এবং সরিষার তেল নিয়ে গরম করুন। এরপর আলতো করে বুকে এবং পিঠে ম্যাসেজ করতে হবে। যতক্ষণ না পর্যন্ত উপসর্গ প্রশমিত হয় ততোক্ষণ ম্যাসেজ করতে হবে। এর ফলে শ্বাসনালীর প্যাসেজ পরিষ্কার এবং স্বাভাবিক শ্বাস ফিরে পেতে সাহায্য করবে। ঘরোয়া উপায়ে হাঁপানি প্রতিকারের এটি খুবই কার্যকরি পদ্ধতি

3. রসুন: রসুন হাঁপানি প্রতিরোধে প্রাকৃতিক প্রতিকার হিসেবে কাজ করে। হাঁপানির একটি বিকল্প চিকিৎসা হিসাবে রসুন ব্যবহার করা যেতে পারে। তাই অ্যাজমা রোগীদের বেশি করে রসুন খাওয়া উচিত।

4. ডুমুর:- ডুমুর কফ ড্রেন এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা উপশমে সাহায্য করে। তিনটি শুকনো ডুমুর পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে একটি পাত্রে সারা রাত ভিজিয়ে রাখতে হবে। সকালে খালি পেটে সে ডুমুর ভিজানো পানি এবং ডুমুর খেয়ে নিতে পারেন। কয়েক মাস বাড়িতেই এ চিকিৎসা চালিয়ে গেলে অবশ্যই ফল পাবেন।

5. আদা:- আদা হাঁপানিসহ বিভিন্ন রোগের জন্য একটি সুপরিচিত প্রাকৃতিক চিকিৎসা। গবেষকদের মতে, আদা শ্বাসনালীর প্রদাহ কমাতে এবং শ্বাসনালী সংকোচন রোধে সাহায্য করে। এক কাপ ফুটন্ত পানির মধ্যে মেথি, আদার রস ও মধু দিয়ে অল্প কিছুক্ষণ জ্বাল দিতে হবে।
 
রোজ সকালে ও সন্ধ্যায় এই মিশ্রণটি পান করলে সমাধান পাওয়া যাবে। এছাড়া আপনি কাঁচা আদা লবণ দিয়ে মিশিয়ে খেলেও উপকার পাবেন।

চিকিৎসাঃ

হাঁপানি তীব্র আক্রমণ হলে রোগীকে সোজা করে বসান, শান্ত করুন এবং আশ্বস্ত করুন। হারবাল চিকিৎসার ক্ষেত্রে হাঁপানি এখন আর কোন বড় রোগ নয়। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এখন হারবাল উপায়ে হাঁপানির চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হচ্ছেন লাখো মানুষ। বাংলাদেশেও হারবাল উপায়ে হাঁপানির চিকিৎসা করছে অনেকে। তবে হারবাল উপায়ে হাঁপানির সব চেয়ে সেরা চিকিৎসা পেতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই আসতে হবে কলিকাতা হারবালের কাছে। অত্যন্ত দক্ষতার সাথে কলিকাতা হারবাল হাঁপানি নিরাময়ের জন্যে কাজকরে আসছেন বহু বছর ধরে। দক্ষ চিকিৎসকের মাধ্যমে প্রাকৃতিক উপায়ে ভেষজ পদ্ধতিতে কলিকাতা হারবাল হাঁপানির কার্যকরী সমাধান দেয়ায় বর্তমানে বাংলাদেশের প্রথম ও সেরা হারবাল চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান। কলিকাতা হারবাল থেকে হাঁপানির সেরা চিকিৎসা নিন, নিজেকে সুস্থ ও সুন্দর জীবন উপহার দিন।


অ্যাজমা বা হাঁপানি সমস্যা কোনো নতুন রোগ নয়। আমাদের আশপাশের অনেকেই এ রোগে আক্রান্ত। এ রোগের জন্যে বাজারে অনেক ধরনের ঔষধ পাওয়া যায়। তবে সম্প্রতি ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুর একটি গবেষণায় দেখেছে, অ্যাজমা চিকিৎসার জন্যে হারবাল চিকিৎসা হচ্ছে সবচেয়ে উত্তম। গবেষকরা অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এবং অক্সিডেটিভ লান্জ ড্যামেজ এর বিরুদ্ধে হারবাল চিকিৎসার প্রভাব নিয়ে গবেষণা করেছেন। তারা দেখেছেন, ফুসফুসের উপর অ্যাজমার প্রভাব নিয়ন্ত্রণে বাজারে প্রচলিত ওষুধের চেয়ে হারবাল ঔষধ সবচেয়ে বেশি কার্যকরী। গবেষকরা বলেছেন, অ্যাজমা চিকিৎসার জন্যে হারবাল চিকিৎসা সবচেয়ে নিরাপদ এবং কার্যকরী। এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়েও কাউকে ভাবতে হবে না।এই গবেষণাটি মেটাবোলোমিকস জার্নালে প্রকাশ করা হয়েছে।

হাঁপানি বা অ্যাজমা একটি ফুসফুসজনিত ভয়ানক রোগ। এর ফলে রোগীর শ্বাসকষ্টের সমস্যা হয়। হাঁপানি অনেক সময় দেখা যায় তীব্র ও দীর্ঘস্থায়ীও হতে পারে। ফুসফুসে বায়ু প্রবাহে বাধার সৃষ্টি হলেই হাঁপানির আক্রমণ হতে পারে। অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্ট এমন একটা রোগ যা হওয়ার নির্দিষ্ট কোন কারন আসলে নেই। এটা সাধারনত এলার্জি, বায়ু দূষণ, শ্বাসযন্ত্রের সংক্রামণ, আবেগ, আবহাওয়া, খাদ্য ও নির্দিষ্ট ওষুধের কারনেও হতে পারে। এখন বর্তমান সময়ে প্রকৃতিতে যেহেতু ধুলাবালির পরিমাণ বেশি তাই হাঁপানি রোগীদের একটু সাবধানতা অবলম্বন করে চলাই ভালো। কারন হাঁপানি রোগীদের জন্যে ধুলাবালি অত্যন্ত ক্ষতিকর একটি বিষয়। অ্যাজমা বা হাঁপানি রোগের এখন অনেক চিকিৎসা রয়েছে পৃথিবীতে। তবে এখন আপনি চাইলে খুব সহজেই কেমিক্যালযুক্ত ওষুধ ছাড়া একদমই প্রাকৃতিক উপায়ে ভেষজ পদ্ধতিতে পরিত্রাণ পেতে পারেন হাঁপানি নামক নিরব প্রাণনাশী ঘাতকের হাত থেকে।

Leave a comment